মৌলভীবাজারে মরণব্যাদি ব্রেন টিউমার কেড়ে নিলো সাইদির প্রাণ
রাজন আবেদীন রাজু, স্টাফ রিপোর্টার:মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে ২৬ জানুয়ারি রোজ শুক্রবার সকাল ৯ টা ৫ মিনিটে না ফেরার দেশে চলে গেলেন ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত সাইদি মিয়া।
কমলগঞ্জ উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের উত্তর যোগীবিল গ্রামের বাসিন্দা হতদরিদ্র সাইদি মিয়া (৩২) তিনি দুই কন্য সন্তানের বাবা,পেশায় ছিলেন মোটর মেকানিক, সংসারের অন্ন জোগানদাতা একমাত্র সাইদি মিয়া’ই ছিলেন ভরসা, গত ২০২৩ সালের মার্চে আক্রান্ত হোন ভয়ংকর এই রোগটিতে।
সাইদি মিয়া ডাক্তার এর শরণাপন্ন হলে পরামর্ষনুযায়ী যত দ্রুত পসিবল ট্রিটমেন্ট শুরু করার নির্দেশনা পান, হতদারিদ্র্য সাইদি মিয়ার পরিবার এর পক্ষে চিকিৎসার খরছ বহন করা সম্ভব ছিলনা, প্রায় ৬ লাখ টাকার মত প্রয়োজন ছিল, এদিক সেদিক হন্য হয়ে সংগ্রহ করেন অল্প কিছু টাকা, একটি প্রাইভেট হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসায় থাকার পর অর্থের কাছে নিরুপায় হয়ে চলে যান ওসমানি মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল ।
ওসমানি হাসপাতালের পুরাতন বিল্ডিংয়ের নিচতালায় ২৭ নং ওয়ার্ডের নিউরোসার্জারি বিভাগে দির্ঘদিন বেডশয্যায় শুয়ে শুয়ে দিন গুনতে লাগেন সাইদি মিয়া।
এদিকে চিকিৎসা ব্যবস্তা ও অর্থের প্রয়োজনে এগিয়ে আসেন কমলগঞ্জ এর রাজনৈতিক অরাজনৈতিক সর্বস্থর এর জনগণ,পৌছে দেয়া হয় অনলাইনে সাহায্যের বার্তা, মানুষগুলোর আর্থিক সহায়তায় সরকারি হাসপাতালে ভাল চিকিৎসা পেলেও রোগীর সংখ্যা ছিল অগণিত। এক এক করে প্রায় তিনমাস পর এলো সাইদি মিয়ার অপারেশন এর ডাক।
হাসপাতাল এর ৫ থালায় অপারেশেন থিয়েটারে (এ ব্লকে) টানা ৬ ঘন্টার অপারেশনেও রক্তনালীর ওপরে থাকা তিনটি টিউমার কাটতে সাকসেসফুল হলেন না সার্জারি টিম ডাক্তারগণ। তাদের ভাষ্যমতে টিউমার কাটতে গেলে তাতক্ষণিক মারা যেতে পারেন সাইদি, মুখটা গুমরো করে সরি বলেই পাশ কাটিয়ে চলে গেলেন একের পর এক ডাক্তার।
আইসিইউতে দশ পনেরো দিন রাখার পর বাড়িতে কাটে বাকি দিনগুলো,অবশেষে জীবন যোদ্ধে হেরে গিয়ে নিভে গেল জীবনের সকল আশার প্রদিপ।
বাড়িটিতে নেমে আসে শোকের ছায়া।
সাইদি মিয়ার মৃত্য’র খবর শুনে তাকে শেষ বারের মত বিদায় জানাতে সাইদি মিয়ার নিজ বাড়ি উত্তর যোগীবিল গ্রামে পবিত্র শুক্রবার জুম্মার নামাজ আদায় শেষে ছুটে আসেন পৌরসভার মেয়র জুয়েল আহমেদ।
যোগীবিল টিলাগাও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাটে অসংখ্য মুসলিম মুসুল্লিদের উপস্থিতিতে মরহুম মোঃ সাইদি মিয়ার।
যানাজার নামাজ সমপন্ন হয়
এ সময় কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জুয়েল আহমেদ সাইদি মিয়ার দু কন্যা সন্তান ও পরিবারের খোজ খবর নেন, তিনি বলেন আমরা কেউ’ই পৃথীবির বুকে আজীবন বেছে থাকবোনা, আমরা যারা এই পৃথীবিতে আছি আমাদের উচিৎ একে অন্যর পাশে থাকা ও সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দেয়া।