হুইল চেয়ার পেয়ে ঘরবন্দি থেকে মুক্তি পেলেন নায়েব আলী
ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ৭০বছরের বৃদ্ধ নায়েব আলী বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন।
অসুস্থতা ও বয়সের ভারে চলাফেরা করতে না পারায় একপ্রকার গৃহবন্দি হয়ে পড়েছিলেন নায়েব আলী। বিষয়টি জানতে পেরে বুধবার বিকেলে হুইল চেয়ার নিয়ে তার বাড়িতে উপস্থিত হন আনন্দ কুমার গুপ্ত। হুইল চেয়ার পেয়ে বন্দিদসা থেকে মুক্তি পেয়ে খুশিতে আপ্লুত হয়েছেন নায়েব আলী।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, উপজেলার পৌর এলাকার ৭নং ওয়ার্ডের স্টেশন পাড়ার বাসিন্দা নায়েব আলী। সুস্থ থাকা অবস্থায় স্টেশনে ছোট একটি ভাতের হোটেল চালিয়ে স্ত্রী ও মেয়ে নিয়ে সংসার চালাতেন। অসুস্থ হওয়ার পর থেকে ব্যবসা বন্ধ হওয়ায় চিকিৎসা ব্যয় ও সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে তার। তার একমাত্র মেয়েটি একটি টেইলার্সে সেলাইয়ের কাজ করে কোন রকমে সংসার চালালেও চিকিৎসা খরচ বহন করতে পারছেন না।
নায়েব আলীর মেয়ে রিফা আক্তার বলেন, চার বছর ধরে হার্টের জটিলতা, শ্বাসকষ্ট, হার্নিয়াসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন তিনি। সম্প্রতি বাবার হার্টের ৫টি ব্লক ধরা পড়ে। কিন্তু হার্টের পাম্পিং স্পিড ২৬এ নেমে আসায় তার অপারেশন করা সম্ভব হচ্ছে না। আমি আমার বাবাকে নিয়ে প্রায় ৪ বছর যাবৎ বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরেছি। একদিকে চিকিৎসার টাকা সংগ্রহ অপরদিকে রোগীর কাছে থাকা একেবারেই অসম্ভব। তাই বাবাকে বাড়িতে নিয়ে এসেছি। বাবা বর্তমানে নিজে চলতে পারে না। তার জন্য একটা হুইল চেয়ারের দরকার ছিলো, কিন্তু কেনার সামর্থ্য আমাদের নাই। আমরা অবাক হয়েছি, হুইল চেয়ার হাতে একজন অপরিচিত মানুষ আমাদের বাসায় এসেছেন। কিভাবে কৃতজ্ঞতা জানাবো ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।
গুপ্তা প্লাইউড এন্ড উড প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিজ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনন্দ কুমার গুপ্ত বলেন,
জানতে পারি একজন অসুস্থ বয়স্ক মানুষ চলাফেরা করতে পারেননা,হুইল চেয়ার কেনারও সামর্থ নেই।তিনি একরকম গৃহবন্দি হয়ে আছেন। বিষয়টি শোনার পর নিজেকে আর সামলে রাখতে পারিনি।
বাজার থেকে একটি হুইল চেয়ার নিয়ে তার বাড়ীতে ছুটে যাই।
তিনি বলেন,সমাজের অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের মুখের একটু হাসি আমাদের জন্য অনেক কিছু বয়ে আনতে পারে। সমাজের প্রতিটি বিত্তবানদের উচিৎ অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো।