ঢাকা | ডিসেম্বর ২৫, ২০২৪ - ১২:৩৩ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ

বগুড়া ধুনট, বহুল আলোচিত শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪

  • দৈনিক নবোদয় ডট কম
  • আপডেট: Sunday, December 27, 2020 - 1:14 am
  • News Editor
  • পঠিত হয়েছে: 76 বার

ধুনট বগুড়া থেকে মোঃ হেলাল উদ্দিন সরকার ঃ বগুড়া জেলার ধুনটে আলোচিত দ্বিতীয় শ্রেনীর শিক্ষার্থী তাবাচ্ছুমকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় করা মামলায় ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে বগুড়া জেলা পুলিশ।

গতকাল শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।গ্রেফতারকৃতরা হলেন – উপজেলার চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের নসরতপুর গ্রামের তোজাম্মেল হকের ছেলে বাপ্পি আহম্মেদ (২২) দলিল উদ্দীনের ছেলে কামাল পাশা(৩৫) সানোয়ার হোসেনের ছেলে শামীম রেজা(২২) ও মৃত সাহেব আলী শেখের ছেলে লাবলু শেখ।

বগুড়া জেলা পুলিশ সিপার আলী আশরাফ ভূঞা ২৬ ডিসেম্বর শনিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সন্মেলনের মাধ্যমে শিশু তাবাচ্ছুমের সাথে সেই রাতে সংঘটিত নারকীয় ঘটনার বিবরণ দেন।

আসামি বাপ্পির পরিবারের সাথে ভিকটিম তাবাচ্ছুমের বাবা বেল্লাল হোসেন খোকনের পারিবারিক দন্দ্ব ছিল। ঘটনার তিন মাস পূর্ব থেকে বাপ্পি তাবাচ্ছুমকে হত্যা করে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন ১৪ ডিসেম্বর সকাল ১০ টায় আসামীরা নসরতপুর হাজী কাজেম টেকনিক্যাল এন্ড বি এম কলেজ মাঠে বসে শিশু তাবাচ্ছুমকে হত্যার পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন ঘটনাস্থলের পার্শ্বে স্থানীয় লোকজনের আয়োজনে ইসলামি জালসা চলছিলো। তাবাচ্ছুম তার দাদা দাদী ও দুই ফুপুর সাথে জালসায় যায়।জালসা চলাকালে তাবাচ্ছুম অন্য শিশুদের সঙ্গে পাশের দোকানে বেলুন কিনতে যায়।পরিকল্পনা অনুযায়ী বাপ্পি রাত ৯ টায় জালসার পাশের দোকান হতে বাদাম কিনে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে তাবাচ্ছুমকে ফুসলিয়ে হাজী কাজেম টেকনিক্যাল এন্ড বি এম কলেজ মাঠে নিয়ে যায়।সেখানে বাপ্পি, কামাল, শামীম রেজা ও লাভলু শেখ মুখ চেপে ধরে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে তাবাচ্ছুম অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে নিস্তেজ হয়ে পড়লে বাপ্পি তাকে গলাটিপে হত্যা করে এবং কাটিং প্লাস দিয়ে হাতের আঙুল কেটে দেয় যাতে মানুষ মনে করে কোন জীবজন্তুর কামড়ে তাবাচ্ছুম মারা গেছে। এরপর বাপ্পি তাবাচ্ছুমের লাশ কাঁধে করে মোজাম্মেলের বাড়ির দক্ষিণ পাশে বাদশার বাঁশ ঝাড়ের নিচে রেখে যায়।যাতে বাদশার ছেলে রাতুলকে(১৬) লোকজন সন্দেহ করে। এরপর বাপ্পি বাড়িতে চলে যায় এবং বাকি তিনজন আসামি জালসায় ভলেন্টিয়ারের দায়িত্ব পালন করতে যায়।

উল্লেখ্য যে,বেল্লাল হোসেন খোকন ও তার স্ত্রী ঢাকায় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করে তাদের একমাত্র মেয়ে মাহী উম্মে তাবাচ্ছুম (৮) দাদা দাদীর সাথে বাড়িতে থাকতো।সে স্থানীয় নসরতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। রাত্রি আনুমানিক ১১ টায় তাবাচ্ছুম ফিরে না আসলে তার দাদা দাদী ফুপুরা খুজতে থাকে।একপর্যায়ে রাত আনুমানিক ১.৩০ মিনিটে লোকজন মোজাম্মেল হকের বাড়ির দক্ষিণ পাশে বাদশা মিয়ার বাঁশ ঝাড়ের নিকটে তাবাচ্ছুমের মৃতদেহ দেখতে পায়।মৃত তাবাচ্ছুমের যৌনাঙ্গ দিয়ে রক্ত ঝড়ছিলো এবং গালে ও বুকে কামড়ের দাগ ছিল।লোকজন তাবাচ্ছুমকে উদ্ধার করে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনায় তাবাচ্ছুমের বাবা বেল্লাল হোসেন খোকন বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ৯(২) ধারায় মামলা দায়ের করেন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুর রশিদের তত্ত্বাবধানে ও শেরপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান এর নেতৃত্বে এই ঘটনার রহস্য উদঘাটন হয়।গত ২৫ ডিসেম্বর রাতে আসামিদের গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার সাথে তাদের জড়িতের কথা স্বীকার করে।
পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা বলেন, গ্রেফতারকৃত আসামিদের আদালতে স্থানান্তর করা হয়েছে।