সন্ত্রাসী আজিজের ভয়ে ৪ বছর ধরে রাঙ্গুনিয়ার বাড়ি ছাড়া, বিধবা মর্তুজার পরিবার
মোঃ শহিদুল ইসলাম (শহিদ), সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার চট্টগ্রাম : চট্টগ্রামস্থ রাঙ্গুনিয়ার ইসলামপুর ইউনিয়নের রাণীরহাট এলাকার মর্তুজা বেগমের স্বামী আহম্মদ মিয়াকে একটি সন্ত্রাসীচক্র মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলায় আসামী করার পর দুশ্চিন্তা ও হতাশা এবং অপমানে তিনি অসুস্থ হয়ে ২০১৮ সালের ১৭ জুন মারা যায়। এরপর থেকে সন্ত্রাসী হামলা, অপহরণ ও মৃত্যুর হুমকির মুখে তার পরিবার পালিয়ে চট্টগ্রাম শহরে অবস্থান নেন। সেই থেকেই এখনো পর্যন্ত এলাকায় যেতে পারছে না বিধবা মর্তুজার পরিবার।
মিথ্যা মামলা, হামলা, জায়গা দখল, হত্যার হুমকির মুখে পরাস্ত, পর্যুদস্ত বৃদ্ধা মর্তুজার পরিবার। ১৩ জানুয়ারি চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এবং সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগগুলো সাংবাদিকদের বলতে গিয়ে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
সংবাদ সম্মেলনে বৃদ্ধা মর্তুজা বলেছেন, মিথ্যা নারী নির্যাতন মামলার অপমান সহ্য করতে না পেরে অকালে মারা গেলেন স্বামী। তাদের অত্যাচার-নিপীড়নের কারণে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে বৃদ্ধা বয়সে ছাড়তে হলো বাড়িঘর। এলাকায় জায়গা-জমি দখল নিয়েছে রাঙ্গুনিয়ার শীর্ষ সন্ত্রাসী এরশাদ ও তার ছোট ভাই সন্ত্রাসী আজিজ।
মেয়ে মায়মুনা আক্তার ময়না বলেন, বাবা মারা যাওয়ার পর সন্ত্রাসী আজিজ ও এরশাদ বাহিনীর ভয়ে আমরা এলাকায় যেতে পারিনি দীর্ঘ ৪ বছর ধরে। মন কেঁদেছিলো তাই, গ্রামের বাড়ির জন্য। গত ৮ জানুয়ারি আমার মা, ছোটভাই সাগর, আমার স্বামী ও বাচ্ছাদের নিয়ে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাই ঐ বাড়ি পৌঁছাতে না পৌঁছাতেই। খবর পেয়ে সন্ত্রাসী আজিজ বাহিনীর ক্যাডার শাহেদ, রাশেদ, শফিকসহ ২০/২৫ জনের সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। ঘর ভাংচুর করে। লোক জনের চিৎকার শুনে আমার চাচা আলহাজ্ব দিল মোহাম্মদ এগিয়ে গেলে তাকে সন্ত্রাসীরা হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে পা ভেঙ্গে দেয়।
পুলিশ ৯৯৯ এর ফোন পেয়ে এসেছে বলিয়া আহমদ মিয়ার পরিবারবর্গ অতিথিদের উদ্ধার করে গাড়িতে উঠিয়া দেয়। দিল মোহাম্মদকে এলাকার লোকজন ও পুলিশের সহায়তায় গাড়িতে উঠাইয়া চিকিৎসার জন্য রাঙ্গুনীয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়া চিকিৎসার কাজ শেষ করে।
ঐ দিন শুক্রবার দিবাগত রাতেই থানায় গিয়া সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা করি। মামলা নং-২৫৯। পুলিশ এখনো পর্যন্ত মামলায় অভিযুক্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
সংবাদ সম্মেলনে আলহাজ্ব দিল মোহাম্মদ বলেন, সন্ত্রাসী আজিজ বাহিনীর হামলায় এক রকম পঙ্গু হয়ে গেছি। স্ট্রাকচারে ভর দিয়ে হাটতে হচ্ছে। পুলিশ না গেলে ওইদিন আমাদের জানে মেরে ফেলতো। তিনি বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী এরশাদ (বর্তমানে জেলে) ও তার ভাই সন্ত্রাসী আজিজ আমাদের কাছ থেকে প্রায় সময় চাদা দাবি করে আসছিল।
তাদের দাবি পূরণ না করায় তারা অব্যাহত হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। তাদের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম আদালতে একটি চাদাবাজি মামলা দায়ের করা হলেও তারা রয়েছেন বহাল তবিয়তে। সংবাদ সম্মেলনে আজিজ বাহিনীকে গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি প্রশাসনের কাছে।