সততা ও স্পষ্টবাদিতায় এ প্রজন্মের আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবেন কার্টুনিস্ট এম এ কুদ্দুস
ঢাকা : ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সিনিয়র সহ-সভাপতি, প্রখ্যাত কার্টুনিস্ট এম এ কুদ্দুস সততা ও স্পষ্টবাদিতায় এ প্রজন্মের আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবেন। আজ বুধবার (২৬ জুলাই ২০২৩) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ডিইউজে আয়োজিত শোক সভায় বক্তারা এ কথা বলেন।
শোক আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএফইউজে- বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ওমর ফারুক বলেন, কুদ্দুস অত্যন্ত মেধাবী মানুষ হয়ে ভুল জায়গায় চলে এসেছিলেন। এই গণমাধ্যমে ওনার আসা ঠিক হয়নি। কারণ বাংলাদেশে সবচেয়ে অবহেলিত হলো সাংবাদিক সমাজ। কুদ্দুস এত বড় একজন শিল্পী হলেও সরকারের পক্ষ থেকে তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ফুল পর্যন্ত দেয়া হয়নি। নীতি আদর্শের প্রতি দৃঢ় প্রত্যয়ী ছিলেন কুদ্দুস। তার মতো মানুষ আমাদের ইউনিয়নের জন্য প্রয়োজন ছিলো।
অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার আন্দোলনের আহ্বান জানিয়ে বিএফইউজের সভাপতি বলেন, আসুন, নতুন করে আন্দোলন সংগ্রামে নামি। নিজেদের এবং এই পেশার অস্তিত্ব রক্ষার জন্য আপনাদের সবাইকে নিয়ে আমরা রাজপথে থাকবো।
বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, মৃত্যুর কয়েকদিন পরই আমরা সবকিছু ভুলে যাই। তাই দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। তা করলে ভালো মানুষ অমর হয়ে যায়। পরিবার উপকৃত হয়।
সভাপতির বক্তব্যে ডিইউজের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী বলেন, অসম্ভব মেধাবী, অদম্য সাহসী ও অনন্য দৃঢ়চেতা একজন মানুষ ছিলেন এমএ কুদ্দুস। তিনি যে আলো জ্বেলে গেছেন সেই আলোয় আমরা পথ চলতে পারবো। সমাজ পরিবর্তন করতে হলে আগে নিজেদের আত্মশুদ্ধির পথে হাটতে হবে।
বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব আবদুল জলিল ভূঁইয়া বলেন, তিনি শুধু একজন শিল্পীই ছিলেন না, ছিলেন একজন যোগ্য ও সৎ ট্রেড ইউনিয়নিস্ট।
শোক আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, কুদ্দুস কত স্বল্পভাষী, কতটা বিনয়ী, সৎ এবং চরিত্রের যে দৃঢ়তা ছিলো সেটা খুব কম মানুষের মাঝেই পাওয়া যায়। সত্যকে সত্য বলা, কালোকে কালো ও সাদাকে সাদা বলার সৎ সাহস তাঁর ছিলো। আমরা তাকে দীর্ঘদিন মনে রাখবো। তিনি আমাদেরকে অনেক কিছু দিয়েছেন, শিখিয়েছেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, মানুষ হিসেবে তিনি ছিলেন একটু আলাদা। যা বিশ্বাস করতেন তাই করে দেখাতেন। শিশির দা ও রনবির পর সেরা কার্টুনিস্ট হলেন কুদ্দুস। তাকে আমার পত্রিকায় নিতে চেয়েছিলাম, সেটি আর হয়ে ওঠেনি।
দৈনিক সংবাদ পত্রিকার বার্তা সম্পাদক ও ডিইউজের সাবেক সভাপতি কাজী রফিক বলেন, দীর্ঘকাল একসঙ্গে কাজ করেছি আমরা। প্রতিদিন একটা করে কার্টুন আঁকতো সে।
সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন, সাধারণত কার্টুনিস্ট থেকে কেউ ট্রেড ইউনিয়নের কর্মকাণ্ডে থাকেন না। আন্দোলন সংগ্রামে পাওয়া যায় না। এ ক্ষেত্রে এম এ কুদ্দুস ছিলেন ব্যতিক্রম। ইউনিয়নে অসামান্য অবদান রেখেছিলেন তিনি।
ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন বলেন, প্রতিবাদী সত্ত্বা ছিলো এম এ কুদ্দুসের। তার প্রতিবাদী সত্ত্বার বিকাশ ঘটেছে শিল্পে, কর্মে ও সংগঠনে। আমাদের সৌভাগ্য যে তার মতো একজন প্রতিবাদী সত্ত্বার নেতা পেয়েছিলাম। এদিক থেকে তিনি অনেকের তুলনায় একজন উঁচুমানের নেতা ও শিল্পী ছিলেন। এম এ কুদ্দুসের মতো আমরা যেন প্রতিবাদী ও সৎ হতে পারি সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করি।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি মুরসালিন নোমানী বলেন, গণমাধ্যমকর্মী আইন যখন হয় তখন উনি কার্টুন একে ওই আইনের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। এম এ কুদ্দুস একজন সৎ মানুষ ছিলেন। আমরা যদি ওনার সততার আদর্শ ধরে রাখতে পারি তাহলেই এমএ কুদ্দুস আমাদের মাঝে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকবেন।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরীর সভাপতিত্বে শোকসভা সঞ্চালনা করেন যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলম।
শোক আলোচনায় অংশ নেন বিএফইউজের কোষাধ্যক্ষ খায়রুজ্জামান কামাল, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুভাষ চন্দ বাদল, জাতীয় প্রেসক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, দৈনিক সংবাদ পত্রিকার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কাশেম হুমায়ুন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মানিক লাল ঘোষ, কোষাধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক এ জিহাদুর রহমান জিহাদ, আইন বিষয়ক সম্পাদক এস এম সাইফ আলী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রাজু হামিদ, কল্যাণ সম্পাদক জুবায়ের রহমান চৌধুরী, নারী বিষয়ক সম্পাদক সুরাইয়া অনু, নির্বাহী পরিষদ সদস্য দুলাল খান, ইব্রাহিম খলিল খোকন, আসাদুর রহমান, আনোয়ার হোসেন, রেহানা পারভীন, সফিকুল করিম সাবু, সিনিয়র সাংবাদিক শাহ নেওয়াজ দুলাল, ঢাকা সাংবাদিক পরিবার সমবায় সমিতির সভাপতি আল মামুন, সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আছাদুজ্জামান, সাবেক নির্বাহী পরিষদ সদস্য গোলাম মুজতবা ধ্রুব, সিনিয়র সাংবাদিক শাজাহান স্বপন, শাজাহান সাজু প্রমুখ।