ঢাকা | ডিসেম্বর ২৫, ২০২৪ - ১১:৩৭ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনামঃ

মুন্ডুমালা তহসিল অফিসে ঘুষ দিলে জমি খারিজ হয় অন্যের নামে!

  • দৈনিক নবোদয় ডট কম
  • আপডেট: Monday, November 6, 2023 - 1:39 pm
  • News Editor
  • পঠিত হয়েছে: 47 বার

সোহানুল হক পারভেজ রাজশাহী : রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা তহসিল অফিসে ঘুষ দিলে জমি খারিজ হয় অন্যের নামে এমন অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিনের। সম্প্রতি এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে খোঁদ মুন্ডুমালা ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহসিলদার) রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে।

তানোর সদরের গুবিরপাড়া মহল্লার বাসিন্দা মৃত আব্দুল জব্বারের পুত্র আব্দুল জলিল বাদী হয়ে তহসিলদার রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে তানোর ইউএনও ও এসিল্যন্ড বরাবর গত ২৯ অক্টোবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এহেন অভিযোগের প্রেক্ষিতে তহসিলদাকে জবাব দিতে বলা হয়। আর আগামী ৬ নভেম্বর শুনালীর জন্য উভয়কে নোটিশ দেন এসিল্যান্ড।অভিযোগ ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, তানোর উপজেলার বাধাঁইড় ইউপির অর্ন্তগত হাপানিয়া মৌজায় তানোর সদরের গুবিরপাড়া মহল্লার বাসিন্দা মৃত আব্দুল জব্বারের পুত্র আব্দুল জলিল গং এর ৪ একর ৮৯ শতক জমি রয়েছে। তফসিল বর্ণিত আরএস ৪ নম্বর খতিয়ানের রেকর্ড আবদুল জববার নামে সাতআনা চৌদ্দগন্ডা অংশ প্রচলিত। উক্ত আবদুল জববারের মৃত্যুর পর তার ওয়ারিশ আব্দুল জলিল গং বাংলা ১৪২৯ সাল পর্যন্ত উক্ত খতিয়ানের আংশিক ১.৩৭১৬ একর সম্পত্তির খাজনা চলতি ২০২৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী পরিশোধ করে। যার আরএস খতিয়ান নম্বর ৪। হোল্ডিং নম্বরও ৪।

ভুক্তভোগী আব্দুল জলিল বলেন, বর্তমানে ১৪৩০ বাংলা সাল পর্যন্ত পূর্বের ন্যায় খাজনা পরিশোধে সম্প্রতি ২৯ অক্টোবর তহসিল অফিসে গেলে তহসিলদার রবিউল ইসলাম জানান তার উক্ত হোল্ডিং-এ কোন জমি নেই। গত ১৯৯৬ সালের ৫ জানুয়ারী আব্দুস সামাদের নামে খারিজ খাজনা হয়ে গেছে। এতে তিনি হতাশ হয়ে পড়েন।

অভিযোগে তিনি জানান, তহসিলদার মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ খেয়ে আব্দুস সামাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পরিকল্পিত ভাবে তার সম্পত্তি অন্যের নামে খারিজ খাজনা করে দিয়েছেন।আব্দুল জব্বারের পুত্র আব্দুল জলিল গং এর সম্পত্তি অন্যের নামে কিভাবে খারিজ খাজনা হয় জানতে চাইলে তহসিলদার রবিউল ইসলাম বলেন, তার হোল্ডিংয়ের সম্পূর্ণ সম্পত্তি ৯০ নম্বর হোল্ডিংয়ে আব্দুস সামাদের নামে স্থানান্তর করা হয়েছে। যার প্রস্তাবিত খতিয়ান নম্বর ৮৯। নামজারি কেস নম্বর ৬১২/৯৬-৯৭। তারিখ ৫ জানুয়ারী ১৯৯৬ খ্রি:।

তাহলে চলতি ২০২৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী আব্দুল জববারের পুত্র ও তার ওয়ারিশ আব্দুল জলিল গং এর মাধ্যমে ওই একই জমির খাজনা নেয়া হয়েছে কেন ইত্যাদি বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মিসকেসের মাধ্যমে উক্ত সম্পত্তি তার পিতার হোল্ডিংয়ে ফেরৎ পেতে পারে বলে এড়িয়ে গেছেন তিনি।কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা গেছে, ওই সময়ে অর্থাৎ চলতি ২০২৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী চেক বা দাখিলা কাটা বাবদ তহসিলদার রবিউল ইসলাম ১৪ হাজার টাকা নেন। কিন্তু একটি দাখিলা বা চেকে ৮৩৬৪ টাকা। আরেকটি চেকে মাত্র ২৯৪ টাকা লিখে দেন। আবার একই দিনে ওই দুটি চেক কাটা হয়। অথচ ওই দুই চেকে তারিখ আলাদা দেন তিনি। এভাবে নামজারি (খারিজ), খাজনা, মিসকেস ও সীমানা নির্ধারণসহ বিভিন্ন কাজের জন্য ঘুষ দিতে হয় ওই ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কম্পিউটার অপারেটরদের।

এব্যাপারে তানোর সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবিদা সিফাত বলেন, আব্দুল জলিলের অভিযোগ আমলে নিয়ে অভিযুক্ত মুন্ডুমালা তহসিলদার রবিউল ইসলামকে জবাব দিতে বলা হয়। এছাড়াও আগামী ৬ নভেম্বর শুনালীর জন্য উভয়কে নোটিশ দেয়া হয়েছে।

তবে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. বিল্লাল হোসেনের সরকারি মোবাইলে ফোন দেয়া হলেও রিসিভ হয়নি।