জাতিগতভাবে এগিয়ে যেতে উদ্ভাবন, গবেষণার বিকল্প নেই
ঢাকা : বিশ্বের যেসব দেশ উদ্ভাবন ও গবেষণায় গুরুত্ব দিয়েছে, তারাই আজ বিশ্বের উন্নত দেশ। এক্ষেত্রে এশিয়ার সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ হলো চীন ও জাপান। প্রতিষ্ঠান হিসেবে একটি বিশ্ববিদ্যালয় তখনই পূর্ণতা পায়, যখন সেখানে জ্ঞান সৃষ্টি ও গবষেণায়কে সমানভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়। জাতিগতভাবে এগিয়ে যেতে বাংলাদেশেও এই উদ্ভাবন ও গবেষণার বিকল্প নেই।
আজ বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে দুই দিনব্যাপী আয়োজিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তারা এসব কথা বলেন। সম্মেলনের আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও সামাজিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক প্রধান অতিথি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. খাজা ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ বিশেষ অতিথি হিসেবে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।
সম্মেলনে বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, একটি রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়নের জন্য গবেষণা প্রয়োজন। এর মধ্য দিয়েই বড় মন তৈরি হবে, ভাবনা বড় হবে। তিনি বলেন, গোটা বিশ্বে উৎপাদনমুখিতা বেড়েছে। কৃষি ও শিল্পসহ সব ক্ষেত্র অভাবনীয়ভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। এর পাশাপাশি যদি বিশ্বব্যবস্থা এবং রাষ্ট্রব্যবস্থা সম্পর্কে নতুন নতুন চিন্তা-ভাবনা হত এবং ধাপে ধাপে তা বাস্তাবায়িত হত; তবে মানুষ প্রকৃত উন্নয়নের সুফল পেত।
তিনি আরও বলেন, পৃথিবী জুড়ে চলা মতকে যেমন গ্রহণ করতে হবে, তেমনি দ্বিমতকেও অগ্রাহ্য করা যাবে না। এ সময় রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে চলা বিরোধ-মীমাংসা মোকাবিলায় ব্যর্থ জাতিসংঘ পুনর্গঠনের দাবি জানান তিনি। পাশাপাশি আন্তর্জাতিকবাদের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন বলেন, সম্মেলনের উদ্দেশ্য শুধু একাডেমিক উৎকর্ষতা নয় বরং আন্তঃ-সাংস্কৃতিক সংলাপ ও পারস্পারিক সহযোগিতার বিষয়টিও এখানে অপরিহার্য। তিনি বলেন, আমাদের চ্যালেঞ্জগুলো আজ বৈশ্বিক। জলবায়ু পরিবর্তন, সামাজিক ন্যায়বিচার বা ডিজিটাল রূপান্তর নিয়ে যতই চিন্তা-ভাবনা করি না কেন; সেখানে কলা ও সামাজিক বিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গিগুলো গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় তিনি গবেষণায় শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদেরকেও নানাভাবে অন্তর্ভূক্ত করার আহ্বান জানান।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. খাজা ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ সম্মেলনের উদ্দেশ্য ও গবেষণার নানা দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ইংরেজি, সমাজবিজ্ঞান ও নৃবিজ্ঞান এবং মিডিয়া কমিউনিকেশন বিভাগ প্রত্যেকে নিজ নিজ ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র্য। এর মধ্যে সমাজবিজ্ঞান বলছে, সামনে এগিয়ে যেতে শুধু টেকনোলজিই যথেষ্ট নয়; ইংরেজি বলছে, পৃথিবীর অন্যতম কঠিন কাজ সঠিকভাবে কবিতা লেখা এবং মিডিয়া কমিউনিকেশন মানুষের জীবনধারা এমনকি এই সম্মেলনের কথা সবার সামনে তুলে ধরছে।
সম্মেলনে আহ্বায়ক এবং কলা ও সামাজিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল্লাহ সম্মেলনের পেপার আহ্বান, জমা ও নির্বাচনসহ এর নানাদিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য গবেষণা অপরিহার্য। এই সম্মেলনের মাধ্যমে কিছুটা হলেও সেই চাহিদা পূরণ হবে। এ সময় তিনি সম্মেলনে জড়িত ও আগত অতিথিদের ধন্যবাদ ও তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এর আগে সম্মেলনের উপস্থাপনের জন্য ৪০৬টি গবেষণাপত্র জমা পড়ে; যেখান থেকে বাছাই শেষে ৩০৬টি প্রবন্ধ নির্বাচিত হয়। দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনে ৬২টি সেশনে এই প্রবন্ধগুলো উপস্থাপন করা হচ্ছে। সম্মেলনের সমাপনী দিন রবিবার বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল (ব্যাক) এর চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মেজবাহ উদ্দিন আহমেদের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।