ভোলায় নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত ডিসির বাসভবন ঘেরাও বিক্ষোভ
ভোলা প্রতিনিধি : ভোলায় আদালতের দুই আদেশের ফলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হওয়ায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অফিস সহায়ক ( পিয়ন ) পদের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে পরীক্ষা দিতে আসা কয়েক হাজার চাকুরি প্রার্থী পরীক্ষার্থী ওই নোটিশ দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। শহরের ৫টি কেন্দ্রে ৩ হাজার ২শ ৩৭ পরীক্ষার্থী এক জোট হয়ে প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নামেন।
বিক্ষোভ মিছিল করে। এক পর্যায়ে এরা প্রেসক্লাব চত্বর প্রতিবাদ সভা করে। পরে জেলা প্রশাসকের বাসভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেস্টা করতে থাকেন।
জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সুজিত কুমার হালদার নিয়োগ পরীক্ষার্থীদের জানান, যেহেতু ওই পরীক্ষা আদালত স্থগিত করেছে বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় এমন তথ্য জানতে পারেন । কেন করেছে তা তারা এখনও জানেন না। আবার রাত ১০টার পর স্থগিত আদেশ ভুল হয়েছে মর্মে আদালত আরো একটি তথ্য প্রকাশ করে। এ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরী হয়। এ অবস্থায় আদালতের প্রথম সিদ্ধান্তের পরেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে পরীক্ষা বন্ধ থাকার ঘোষনাপত্র টানিয়ে দেয়া হয়। রোববার আদালতের আদেশ যাচাই করে শিগগিরই এই পরীক্ষা নেয়ার আশ^াস দেন জেলা প্রশাসক।
পরে দুপুর ১টায় আন্দোলনরত পরীক্ষার্থীরা তিন দিনের সময় দিয়ে জেলা প্রশাসক বাসভবনের অবরোধ তুলে নেন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম সাংবাদিকদের জানান, নিয়োগ পরীক্ষাটি রাষ্ট্রিয় কার্যাবলীর অংশ ছিল। আদালতের এমন আদেশে তাদের রাষ্ট্রিয় কাজ ক্ষতিরমুখে পড়ে। এ জন্য তারা বিভ্রত হয়েছেন। এর দায় তারা নিতে পারেন না। এই দায় কে নিবেন এমন প্রশ্নও তোলেন তিনি।
জানা যায়, জেলা প্রশ্সাক কার্যালয়ের মাস্টার রোলে চাকুরি করেন এমন এক ব্যক্তির নিষেজ্ঞা চেয়ে আদালতে মামলা কারায় সিনিয়র সহকারী জজ ভোলা সদর অদালত ওই আদেশ প্রদান করেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসক যুগান্তরসহ একাধিক সংবাদ মাধ্যমকে জানান আদালতের নিষেজ্ঞার কারনে শুক্রবারের নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া যাচ্ছে না।
আদালতের আদেশে বিভ্রান্তী তৈরী হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। লিখিত নিয়োগ পরীক্ষার জন্য সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পরও ওই পরীক্ষা আর নেয়া সম্ভব হয় নি। এদিকে রাত থেকে পরীক্ষা হবে কি হবে না তা নিয়ে বিপাকে পড়েন কয়েক হাজার চাকুরি প্রার্থী ( পরীক্ষার্থী) ।
ভোলা সদর সিনিয়র সহকারী জজ ভোলা সদর আদালতের দেওয়ানি ২৮/২০২১ নম্বর মোকাদ্দমার নিয়োগ পরীক্ষার উপর নিষেধাজ্ঞারোপ করেন বিচারক । ওই আদেশ পেয়ে পরীক্ষার কার্যক্রম বন্ধ করে দেন জেলা প্রশাসক। পরে একই আদালতে একই সেরেস্তদারের সাক্ষরে জানান্ োহয় অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ পরীক্ষার উপর কোন স্থগিতাদেশ দেয়া হয় নি। ভুল বশত সাচিং স্লিপে উল্লেখ ভুল বশত ওই তথ্য লেখা হয়েছে।
এ নিয়ে সোসাল মিডিয়ায় আলোচনার ঝড় ওঠে। জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে প্রতি পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা বন্ধ রাখার ঘোষনাপত্র টানিয়ে দেয়া হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, দেওয়ানি আদালতের স্থগিতাদেশের কারনে ২২/১/২০২১ তারিখের অনুষ্ঠিতথ্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অফিস সহায়ক পদের নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করা হলো। আদেশক্রমে জেলা প্রশাসক, ভোলা।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভ’মি বিষয়ক বিভাগে ১৫টি পদের জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আবেদনকারী ছিলেন ৩ হাজার দুইশ ৩৭ জন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের একটি কলেজ ও ৪টি স্কুলে এই নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এ্যাডভোকেট মো: জিয়াউর রহমান জানান, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বিনা নিয়োগে দায়িত্বরত ১০ জন ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষায় স্থগিতাদেশ চেয়ে মামলা দায়ের করেন। মোকদ্দমায় শুনানী শেষে বৃহস্পতিবার ভোলা সদর সিনিয়র সহকারী জজ মোহাম্মদ নাসিম মাহমুদ এক আদেশ প্রদান করেন।