কুষ্টিয়াতে সিন্ডিকেট করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী
নিজস্ব প্রতিনিধি : প্রধানমন্ত্রীর সকল নির্দেশনাকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে কোটি কোটি টাকার ঘুষ বানিজ্য করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সিন্ডিকেট করে ন্যাচারাল সালেহ আহমেদ ও ন্যাচারাল লিয়াকত আলী প্রতিষ্ঠানের একাধিক কাজ থাকা সত্বেও কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পিযুষ কৃষ্ণ কুন্ডু তাদের সাথে আতাত করে পুনরায় তাদেরকে শত কোটির টাকার কাজ বুঝিয়ে দিচ্ছেন।একই প্রতিষ্ঠানের একাধিক কাজ থাকায় কাজের মান খারাপ ও কাজ শেষ হতে বিলম্ব হচ্ছে। এর কারনে নামে মাত্র কিছু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অঢেল সম্পদের মালিক হচ্ছে সাথে কুষ্টিয়া পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী নামে বেনামে গড়ে তুলেছেন কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি। অন্যদিকে বাকি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গুলো অথই সমুদ্রের মাঝে তলিয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চলমান কাজ শেষ করলে পরের কাজ পাবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গত (২৪ নভেম্বর) মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ নির্দেশনা দেন। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সামনে প্রধানমন্ত্রীর এসব বক্তব্য তুলে ধরেছিলেন পরিকল্পনা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সদস্য মো: আসাদুল ইসলাম। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে সচিব বলেছিলেন , আমাদের অনেক প্রকল্প, নির্মাণে দেরি হয়ে যায়।
এই দেরির একটা কারণ হলো একই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অনেকগুলো কাজ পেয়ে থাকে। মুষ্টিমেয় প্রতিষ্ঠান কাজ করে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কে কতগুলো কাজ পেয়েছে, কাজ সময়মতো শেষ করেছে কি না, কোন সময় শেষ করেছে, এসবের একটি তালিকা সব মন্ত্রণালয় তৈরি করবে এবং তা প্রকাশ করতে হবে বলে জানিয়েছিলেন সেই সভায়। (চলমান) কাজ শেষ করলে পরের কাজ পাবে। এর দুটি উদ্দেশ্য। একটি হলো নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে নির্মাণকাজের জন্য, মুষ্টিমেয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সীমিত থাকব না। দ্বিতীয়ত সময়মতো আমাদের নির্মাণকাজ শেষ হবে। সুত্র ১! প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের স্মারক নং – ০৩০৭৩০৪৬২১০০০০১২০১৮২৫৯ তারিখ ৩রা,অক্টোবর ২০১৯ খৃস্টাব্দে।
সুত্রে জানা যায়, প্রথমত: মোঃ লিয়াকত আলীর কাজের মেমো নং ২/১৪৬৬, তারিখ: ২৩-০১-২০২০, টাকার পরিমান: ১৯,৮০,০৩,১০১.৬৪৩ কোটি টাকার। লিয়াকত আলীর কাজের মেমো নং ২/১৪৬৫, তারিখ: ২৩-০১-২০২০, বাজেট: ১৯,৮০,৩২,৯৩৭.১৫৮। লিয়াকত আলীর কাজের মেমো নং ২/৯২, তারিখ: ১৪-০৭-২০২০, বাজেট: ২৫,২৬,৫১,২৪৭.৩৩৫। লিয়াকত আলীর কাজের মেমো নং ২/৯৩, তারিখ: ১৪-০৭-২০২০,বাজেট ২৫,২৬,৪৭,৭৮৯.১৩০ টাকা। দ্বিতীয়ত: মোঃ নাসির উদ্দিন মোল্লা কাজের মেমো নং ২/১৪৭৭, তারিখ: ৩০-০১-২০২০, বাজেট দেয় ১২,৬৩,২৪,১৮১.৪৪৯। নাসির উদ্দিন মোল্লা, কাজের মেমো নং ২/১৪৭৮, তারিখ: ৩০-০১-২০২০, বাজেট ২৫,৯৪,৫২,৩৪৪.০৬১ টাকার। নাসির উদ্দিন মোল্লায়, বাজেট, ৩কোটি ৭৬ লক্ষ টাকার। তৃতীয়ত মোঃ সালেহ আহমদ, কাজের মেমো নং ২/৯৪, তারিখ: ১৪-০৭-২০২০, বাজেট, ২৫,৯৪,৪৫,৯১৬.৫৯৪ টাকার। সালেহ আহমদ, বাজেট, ২৬ কোটি টাকা আনুমানিক। চতুর্থ: ন্যাশন টেক, কাজের মেমো নং ২/১৪৭৮, তারিখ: ১৩-০১-২০২০ বাজেট ২৫,৯৪,৫২,৩৪৪.০৬১। ন্যাশন টেক, কাজের মেমো নং ২/১৪৬৫, তারিখ: ২৩-০১-২০২০, বাজেট ১৯ কোটি ৮০ লক্ষ ৩২০০০হাজার টাকার। ন্যাশন টেক, কাজের মেমো নং ২/১৪৬৬, তারিখ: ৩০-০১-২০২০, বাজেট, ১৯ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার। পঞ্চম: তাজওয়ারের কাজের মেমো নং ২/৯২,দেয় তারিখ: ১৪-০৭-২০২০, বাজেট ২৫,২৬,৫১,২৪৭.৩৩৫ টাকা। তাজওয়ারের কাজের মেমো নং ২/৯৩, তারিখ: ১৪-০৭-২০২০, বাজেট, ২৫,২৬,৪৭,৭৮৯.১৩০। এই কাজের ঠিকারদারী প্রতিষ্ঠান গুলোর চলমান কাজের অগ্রগতি ১০-১৫% হয়েছে বলে জানা যায়। পূণরায় তারা নতুন কাজ কিভাবে পাই এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন সরকারীভাবে কোন নির্দেশনা পাননি বলে জানান।
২. সিপিটিইউ,র স্মারক নং ২১,০০,০০০, ৩৬৪,২২, ০২০,১৯ ২০২, তারিখ ১০ ই অক্টোবর ২০১৯ খৃস্টাব্দে। অথচ প্রধানমন্ত্রীর এই সকল নির্দেশনা সম্বন্ধে গতকাল মঙ্গলবার সাংবাদিকরা পিযুষ কৃষ্ণ কুন্ডুর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন এরকম কোন নির্দেশনা এখনও আমরা পাইনি।ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সিন্ডিকেট ও তার দুর্নীতি নিয়ে সাংবাদিকরা তাকে সরাসরি প্রশ্ন করলে তিনি কোন সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। নাম বলতে অনিচ্ছুক কয়েকটি ঠিকাদার অভিযোগ করে সাংবাদিকদের কাছে বলেন কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পীযুষ কৃষ্ণ কুন্ডুর সাথে কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের আতাত থাকার কারনে তারা তাকে কোটি কোটি টাকার ঘুষ বানিজ্য করে কাজ নিয়ে নেয়।আমরা দেশ ও দশের স্বার্থে তার সাথে আতাত না করার কারনে আমরা কাজ পায়নি। এতে দিন দিন আমরা,মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ছি। যদি এখনও পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীর এই ঘুষ বানিজ্য ঠেকানো না যায় তাহলে দেশ তথা আমরা বাকি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গুলো অথই সমুদ্রের মাঝে তলিয়ে যাব।নির্বাহী প্রকৌশলী পিযুষ কৃষ্ণ কুন্ডুর কোটি কোটি টাকার ঘুষ বানিজ্য বন্ধ করে দেশের কোটি কোটি টাকার সম্পদ রক্ষা করতে সাধারন ভুক্তভোগীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তাদের এর সঠিক তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।